জয়পুরহাটে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

জয়পুরহাটে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ


বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশসেরা পদক পাওয়া জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসান বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আক্কেলপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা থাকাকালীন ওই সরকারের সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের অত্যন্ত ঘনিষ্ট ও আস্থাভাজন ছিলেন। সেসময় তিনি ওই হুইপকে ম্যানেজ করে ২০২৪ সালে লবিং করে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পুরস্কার ও সনদ নেন। এরপর থেকে বেপোরোয়া ও আত্নঅহংকারী কর্মকর্তা হন তিনি। জুলাই আন্দোলনের পর সুযোগ বুঝে জনরোষানল থেকে বাঁচতে আক্কেলপুর থেকে সদর উপজেলায় বদলী হন। যোগদানের পর নানা অনিয়ম, ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন, ভুয়া টিএ বিল উত্তোলন, ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, সঠিক সময়ে অফিসে না আসা, স্লিপ নীতিবহিভূর্তভাবে ইচ্ছে মতো অর্থ ব্যয় করার জন্য প্রধান শিক্ষকদের চাপ দেন, শিক্ষকদের নায্য পাওয়া সঠিক সময়ে না দেওয়া, ২০২৩ সালের পরীক্ষা নীতিমালা বহির্ভূতভাবে প্রশ্নপত্রের জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ স্বেচ্ছাচারিতা করেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসান। এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে শিক্ষকদের অকথ্য ভাষায় গালিগাজাজ করে বিভাগীয় মামলার হুমকি দেওয়া হয়। এতে শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সগুনা গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক জানান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অনিয়মের কারণে আমরা স্লিপের কাজ করতে পারছি না। তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই আমাদের হুমকি দেওয়া হয়।

পালী পল্লিমঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ওয়াহেদ গণি জানান, আমরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নানা অনিয়ম নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা এই দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা চাই না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে জানতে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: মাসুদুল হাসানের কক্ষে গেলে তিনি এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।

তদন্ত কমিটির প্রধান জেলা ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: রুহুল আমিন বলেন, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এরপর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আফরোজা আকতার চৌধুরী বলেন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: রুহুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2023 tulshigonga24.com privacy-policy Contact Us About Us
Design BY NewsTheme